গাজায় ফের স্থল অভিযান শুরু ইসরাইল সেনার
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে মানুষজন ঘুমাতে যায়। ঠিক তেমনি গাজার মানুষও যখন দিনের শেষে রাত হলে ঘুমাতে যায় ঠিক তখনই রাতের আকাশে ভেসে উঠে যুদ্ধ বিমানের গর্জন। এর একটু পরেই আগুন ছড়িয়ে পরে ঘরে ঘরে। এমন বিভিৎস চিত্র এখন গাজার প্রত্যেক দিনের বাস্তবতা।
শনিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছিল অন্তত ১৫ জন্য ফিলিস্তিনি এবং আহত আরো গণ্না ব্যাতিত অনেকেই। ইসরাইলের অব্যাহত বোমা বর্ষণের পাশাপাশি এবার শুরু হয়েছে পুর্ণাঙ্গ স্থল অভিযান। রাফা, খান ইউনিস, বেইদ হানুন, বেইদ লাহের এর মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর দখল নিচ্ছে এখন ইসরাইলি সেনারা।
খান ইউনিস এর কাতাওয়া সর্নাধি শিবিরের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে ড্রোন হামলায় নিহত হয় ৩ জন। একই এলাকার একটি এপার্টমেন্টে হামলায় নিহত হন ১ জন, এবং আহত হন তার স্ত্রী ও সন্তান। গাজা শহরের আল-যাইতুন এলাকায় কামানের গোলায় প্রাণ হারায় এক তরুণী।
সুজাইয়ায় আবু আত্মা পরিবারে বোমা হামলায় হতাহত হয় আরো অনেকে। একই এলাকায় আরো একটি ড্রোন হামলায় আহত হন আরো দুই ফিলিস্তিনি। রাফা ও এর আশপাশে আব্যাহত কামান হামলায় বহু পরিবার তাদের শেষ আশ্রয়স্থল তাবু হারিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ৬০ জন নিহত এবং ১৬২ জন আহত হয়েছে। মার্চ ১৮ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত ২৫০ জন, আহত হয়েছে ৩ হাজারেরও বেশি।
সবথেকে ভয়ংকর দিক হলো এই হামলার সাথে সাথে চলতে ঘেরাও ও অবরোধ। এছাড়াও ত্রাণ পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না গাজা বাসির কাছে। জাতিসংঘের UNRW এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন ইসরাইল খাবার ও মানবিক সাহায্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করছে।
মার্চের ২ তারিখ থেকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে সব সিমান্ত। ঢুকছে না কোন খাদ্য, ঔষধ বা জ্বালানি ও। এই নিষ্ঠুর অবরোধের কারণে পুরো গাজা আজ এক মানবিক দুর্যোগের মুখে। গাজার মানুষের বাঁচার আশায় কান্না আকাশ ছুয়ে যাচ্ছে।
সুজাইয়ায় বহু নারী ও শিশু আল-জাজিরার মাধ্যমে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন। তারা বলছেন "শেল্টার থেকে বের হলেই মৃত্যু। আকাশ থেকে নেমে আসছে আগুন আর জমিনের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন পরিবারগুলো এখন দিশেহারা"
এইদিকে ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনি এখন গোপন অভিযানে নেমেছে। সেনা প্রধান ইয়াল জামির জানিয়েছেন সকল সামরিক পরিকল্পনা গোপন রাখতে। বাড়ানো হয়েছে বিমান, কামান এবং গোয়েন্দা ইউনিটের তৎপরতা।
গাজার বর্বরতা কি বন্ধ হবে?
এই বর্বরতা বন্ধ হওয়ার কোনোই লক্ষণ নেই। আন্তর্জাতিক আহ্বান বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে। মার্কিন সমর্থনে ইসরাইল অব্যাহত রেখেছে গণহত্যা। গাজা এক মৃত্যর উপত্যকা- যেখানে প্রতিদিনের সকাল মানেই নতুন নতুন নিঃস্ব পরিবার।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url